এবার নারায়ণগঞ্জে রূপগঞ্জে গাজী টায়ার কারখানায় আগুনে পুরে যাওয়া ৬ তলা ভবনে নিখোঁজদের মাথার খুলি ও হাড়ের টুকরো পাওয়া গেছে। গতকাল রোববার (১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে গণগুনানি শেষে ওই ৬তলা কারখানার উপরের ফ্লোর থেকে এ হাড়ের টুকরাগুলো উদ্ধার করে নিখোঁজের স্বজনরা। পরে ওই হাড়গুলো পুলিশের কাছে দেয়া হয়।
এদিকে কারখানার প্রধান ফটকে গণশুনানি শেষে নিখোঁজদের সন্ধানের দাবিতে তাদের স্বজনরা পাশে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক কিছুক্ষণ অবরোধ করে বিক্ষোভ করে। পরে তদন্ত কমিটির প্রধান হামিদুর রহমান সেনাবাহিনী ও বিজিবির সহায়তায় তাদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে কারখানায় নিয়ে আসেন। তখন নিখোঁজের স্বজনরা শর্ত দেয় তাদের আগুনে পুরে যাওয়া ভবনে সামনে যেতে দিতে হবে।
পরে নিখোঁজ স্বজনদের ওই ভবনের সামনে যান। এ সময় সেনাবাহিনী-বিজিবি সদস্যদের বাধা উপেক্ষা করে কয়েকজন যুবক আগুনে পুড়া ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটিতে উঠেন। একটি মাথার খুলি ও হাড়ের কিছু অংশ উদ্ধার করে এনে পুলিশকে দেখান। বুয়েটের বিশেষজ্ঞ দল কারখানাটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় ফায়ার সার্ভিস উদ্ধার অভিযান বন্ধ রেখেছে।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মাহামুদুল হক জানিয়েছেন, বুয়েটের বিশেষজ্ঞ দল ভনটি ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করায় এখন উদ্ধার অভিযান চালানো সম্ভব হচ্ছে না। কারখানা মালিক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে ভনটি ভেঙে অপসারণ করার সিদ্ধান্ত হলে তখন ফায়ার সার্ভিস অভিযান চালাবে। এ ব্যাপারে জেলা পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার জানান, প্রাপ্ত হাড়গুলো ডিবি পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা হলে ডিএনএ পরীক্ষার পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে, গণশুনানিতে নিখোঁজ ব্যক্তিদের মধ্যে ৭৮ জনের তালিকা করেছে জেলা প্রশাসনের ৮ সদস্যের তদন্ত কমিটি। গত ২৫ আগস্ট রাত সাড়ে ১০টায় রূপগঞ্জের রূপসীতে গাজী টায়ার কারখানায় আগুন লাগে। দীর্ঘ ২১ ঘণ্টা পর সোমবার সন্ধ্যা ৭টা ৫ মিনিটে ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ওই ভবন থেকে ১৪ জনকে জীবিত উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস।
এই ঘটনায় স্বজনদের দাবি অনুযায়ী ১৭৪ জন নিখোঁজের তালিকা করে ফায়ার সার্ভিস। পরে নিখোঁজের তালিকা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হলে শিক্ষার্থীরা ফের নতুন করে ১২১ জনের তালিকা করেন। গণশুনানিতে নিখোঁজের ৭৮ জনের নামের তালিকা করেন তদন্ত কমিটি।